বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি অনেকটা আলোচিত হচ্ছে নির্বাচনের প্রভাবের কারণে। বায়ডেন বনাম ট্রাম্প নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে এবং এটি বিশ্ব অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। অনেকেই ধারণা করছেন যে বায়ডেন প্রেসিডেন্টের দৌড় থেকে সরে যেতে পারেন, যা ডেমোক্র্যাটদের জয়ের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল
ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বায়ডেনের স্থান নিতে নতুন প্রার্থী আসার সম্ভাবনা আছে, যা ট্রাম্পের বিজয়ের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। যদি ট্রাম্প আবার প্রেসিডেন্ট হন, তবে প্রোটেকশনিস্ট নীতির কারণে চীন ও অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারে। বিশেষ করে মেক্সিকান পেসো এবং চীনা ইউয়ান সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের সম্ভাব্য প্রভাব
ট্রাম্পের বিজয়ে প্রাইভেট প্রিজন স্টকগুলো বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে এবং রিপাবলিকানদের ব্যবসা বান্ধব নীতি শেয়ার বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, ভারতীয় আইটি কোম্পানিগুলোর উপর চাপ বাড়তে পারে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কারণে।
ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক ও ইউরোপীয় অর্থনীতি
ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক ইদানীং মুদ্রাস্ফীতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের ২০২৫ সালের মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। ইসিবি সাম্প্রতিক সময়ে সুদের হার কমিয়েছে, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির অবস্থার কারণে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
ইইউ এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্য
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চীনা তৈরি ইলেকট্রিক ভেহিকেলগুলির উপর ট্যারিফ আরোপ করেছে, যার ফলে চীন থেকে আমদানিতে প্রভাব পড়বে। এর ফলে চীন থেকে কগন্যাক এবং পোক মাংসের রপ্তানির উপরও প্রভাব পড়তে পারে।
[আরো পড়ুন:👉 ভারতীয় অর্থনীতি আগামী তিন বছরে কোথায় পৌঁছবে! কী বলছে ডেটা সাইন্স!]
ভারতীয় অর্থনীতি ও ইলেকট্রিক ভেহিকেল পরিকল্পনা
ভারতের সরকার ইলেকট্রিক ভেহিকেল গ্রহণ ও উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে তিনটি বড় প্রকল্প শুরু করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় উৎপাদন এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যাটারির উৎপাদন। এছাড়া, সরকার দ্রুত ইলেকট্রিক বাস ক্রয় করতে চাইছে, যা পরিবহন খাতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
ভারতের সৌর বিদ্যুতের উৎপাদন
২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ভারতের সৌর বিদ্যুতের উৎপাদন গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্বাচনের সময় এবং প্রচণ্ড গ্রীষ্মের কারণে সরকারী মনোযোগ এবং বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে অন্য উৎসের উপর বেশি নির্ভর করা হয়েছে।
ভারতীয় শেয়ার বাজারের অগ্রগতি
বিএসই-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির বাজার মূলধন সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৪৭ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। তবে, ছোট ও মাঝারি আকারের কোম্পানিগুলির মূল্যায়ন সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য এটি একটি ভাল সময় হতে পারে, তবে সামগ্রিক বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে বিনিয়োগ করা উচিত।
HDFC ব্যাংকের অর্থনৈতিক স্থিতি
এইচডিএফসি ব্যাংক তাদের ঋণ এবং আমানতের ক্ষেত্রে কিছু মিশ্র ফলাফল দেখিয়েছে। যদিও ঋণ খাতা বছরের উপর ১৫ শতাংশ বেড়েছে, তবে চতুর্থ ত্রৈমাসিকে সামান্য হ্রাস পেয়েছে। আমানতেও ১৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে, যা একটি ইতিবাচক দিক। তবে, কর্পোরেট ঋণ এবং হোলসেল ঋণে হ্রাস দেখা গেছে।
বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি এবং নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশ ও অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলো। একই সাথে ভারতীয় অর্থনীতির ওপর প্রভাব এবং সরকারের পরিকল্পনাগুলিও আলোচনা করা হয়েছে। সকলের জন্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, বিশেষ করে বিনিয়োগকারীদের জন্য, যেখানে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
[আরো পড়ুন:👉 ভারতের ইউনিয়ন বাজেট: প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার প্রক্রিয়া]