বর্তমান যুগে, ব্যক্তিত্বের বিকাশ এবং তার পেছনে থাকা কারণ নিয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে। জন্ম ক্রম এবং এর প্রভাব নিয়ে প্রচুর তর্ক-বিতর্ক রয়েছে। সম্প্রতি, ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের পেডিয়াট্রিক সাইকোলজিস্ট ডক্টর কেট এচেলম্যান, হেলথ এসেনশিয়ালস পডকাস্টে অংশগ্রহণ করে এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
ডক্টর এচেলম্যানের মতে, শিশুদের জন্ম ক্রম তাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রথম সন্তান সাধারণত বুদ্ধিমান, নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন এবং দায়িত্বশীল হয়। দ্বিতীয় সন্তান, অর্থাৎ মধ্যম সন্তান, অনেক সময় মধ্যস্থতাকারী এবং স্বাধীন মনোভাবাপন্ন হয়ে থাকে। সর্বকনিষ্ঠ সন্তানদের মাঝে সাধারণত মজাদার, সমাজিক এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের দেখা যায়। তবে, তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, এই তত্ত্বগুলো সবসময় সত্য নয় এবং অনেক সময় পারিবারিক পরিবেশ ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে।
ডক্টর এচেলম্যান আরও বলেন যে, পিতামাতার ভূমিকা এবং পারিবারিক পরিস্থিতি শিশুদের ব্যক্তিত্বের বিকাশে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে পিতামাতা বেশি সতর্ক এবং বেশি সময় দেয়, যা তাদের ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলে। অপরদিকে, সর্বকনিষ্ঠ সন্তানের ক্ষেত্রে পিতামাতারা কম সতর্ক থাকেন এবং এই কারণেই তারা বেশি স্বাধীন মনোভাবাপন্ন হতে পারে।
তবে, আধুনিক গবেষণা বলছে যে, জন্ম ক্রমের প্রভাব অতীতের তুলনায় এখন কম। জন্ম ক্রম তত্ত্বের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, এটি একটি মজার আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অনেকেই নিজেদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করেন।
ডক্টর এচেলম্যানের পরামর্শ হলো, প্রতিটি শিশুকে তাদের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী লালন পালন করা উচিত এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যত্ন নেওয়া উচিত। পরিবারের প্রতিটি সন্তানের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা এবং তাদের ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করা পিতামাতার দায়িত্ব।
সর্বশেষে, তিনি বলেন, “জন্ম ক্রম তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করা মজার হলেও, এটি একমাত্র কারণ নয় যা আমাদের ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে। এটি একটি ছোট অংশ, যা আমাদের বড় ব্যক্তিত্বের ধাঁধার একটি খণ্ডমাত্র।”
এভাবেই জন্ম ক্রম এবং ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলোচনা চলতে থাকবে এবং আমরা হয়তো ভবিষ্যতে আরও নতুন তথ্য জানতে পারব।